গলাচিপায় হিন্দু মন্দিরে হামলা, প্রতিমা ভাঙচুর, আটক মো. রাসেল

গলাচিপায় হিন্দু মন্দিরে হামলা, প্রতিমা ভাঙচুর, আটক মো. রাসেল


পটুয়াখালীর গলাচিপায় তিনটি মন্দিরে হামলা চালিয়ে প্রতিমা ও মন্দির ভাঙচুর এবং সংখ্যালঘুদের হুমকি দেয়ার ঘটনায় মো. রাসেল (৩০) নামে এক সন্ত্রাসীকে গ্রেপ্তার করেছে গলাচিপা থানা পুলিশ।

এ ঘটনায় আনন্দময়ী কালী বাড়ি মন্দিরের সভাপতি রবীন্দ্র নারায়ন নন্দী বাদী হয়ে রাসেলের বিরুদ্ধে ওই রাতে মামলা দায়ের করেন। রাতেই অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আহমাদ মাঈনুল হাসানসহ পুলিশের অন্যান্য কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।

ছবি - আটক মো. রাসেল

মঙ্গলবার বেলা ১টা ৩০ মিনিটের দিকে উপজেলার ডাকুয়া ইউনিয়রের ডাকুয়া গ্রামের আনন্দময়ী কালী বাড়ি মন্দিরের গেটের তালা ভেঙে মন্দিরের ভিতর ঢুকে পার্শ্ববর্তী ফুলখালী গ্রামের হাকিম আলির ছেলে দাও দিয়ে কুপিয়ে দূর্গা প্রতিমার বাম হাত কেটে ফেলে। এ সময় লোকজন এসে পড়লে রাসেল দৌড়ে পালিয়ে যায়। এরপর আটখালী গ্রামের শিপন ডাক্তারের বাড়িতে ঢুকে ঘরের বেড়া ও চালের টিন কোপায়। ঘরের ছাদের ওপর থাকা মহাদেবের ত্রিশুল ভেঙে ফেলে দেয়। শিপনের মাথায় ইট ছুড়ে মারলে সেই ইট গৃহবধূ সুমা রানীর পায়ে লেগে আহত হয়। তাদের চিৎকার শুনে লোকজন ধাওয়া করলে রাসেল দৌড়ে পালিয়ে যায়।


এছাড়া বিকাল সাড়ে ৫টার দিকে রাসেল ডাকুয়া গ্রামের নন্দী বাড়ির মনসা মন্দিরের তালা ভেঙে মন্দিরের ভিতর ঢুকে পাঠা বলি দেয়ার কাঠগোড়া তুলে নিয়ে মনসা প্রতিমার ওপর আঘাত করে ভাঙচুর করে। এ সময় সঞ্জীব কুমার গায়েন রাসেলকে ধরার চেষ্টা করলে রাসেল হত্যার উদ্দেশ্যে তার গলায় ধারাল দাও ধরে। আশপাশের লোকজন সঞ্জীবকে উদ্ধার করতে এগিয়ে আসলে রাসেল অশ্লীল ভাষায় গালাগাল করে খুন জখমের হুমকি দিয়ে দ্রুত চলে যায়।


মন্দিরে হামলার খবর পেয়ে সন্ধ্যায় গলাচিপা থানার অফিসার ইনচার্জ শোনিত কুমার গায়েন রাসেলকে আটক করেন।

আনন্দময়ী কালী বাড়ি মন্দিরের সভাপতি রবীন্দ্র নারায়ন নন্দী বলেন- ‘মন্দিরে হামলা করে ভাঙচুর করায় আমরা খুব ভয়ে আছি। তবে পুলিশ তাৎক্ষণিকভাবে আমাদের পাশে এসে দাঁড়িয়েছে। এমপি সাহেবও আমাদের সাথে কথা বলেছেন এবং আর্থিক সাহায্য করেছেন। যেকোন ধরনে সাহায্যর জন্য তিনি প্রস্তুত আছেন বলে জানিয়েছেন।’


গলাচিপা থানার অফিসার ইনচার্জ শোনিত কুমার গায়েন বলেন- ‘মন্দিরে হামলার খবর পেয়ে সন্ধ্যায় তাৎক্ষণিকভাবে অমরা অভিযুক্ত রাসেলকে আটক করেছি। অধিকতর তদন্ত শেষে এর সাথে অন্য কেউ জড়িত আছে কিনা তা যানা যাবে। এছাড়া এ উদ্দেশ্য কি তাও পরিষ্কার হবে।

পরে রাত ৯টায় অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আহমাদ মাঈনুল হাসান, সিনিয়র সহকারি পুলিশ সুপার মোর্শেদ তোহাসহ পুলিশের অন্যান্য কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। এ সময় তিনি বলেন- মন্দিরে হামলাকারী রাসেলকে পুলিশ আটক করেছে। এখানে হিন্দু-মুসলিম সব ধর্মের লোক স্বাধীনভাবে যার যার ধর্ম পালন করবেন। কেউ এ সম্প্রীতি নষ্ট করার চেষ্ট করলে কাউকে ছাড় দেয়া হবে না।

-HTPC

Post a Comment

Previous Post Next Post