হিন্দুদের অর্পিত সম্পত্তি দখল করে জামাত-শিবিরের কোচিং সেন্টার

হিন্দুদের অর্পিত সম্পত্তি দখল করে জামাত-শিবিরের কোচিং সেন্টার


চট্টগ্রাম নগরীর চকবাজারে সিরাজদ্দৌলা সড়কে ১১ শতক জমি থেকে ইসলামী ছাত্র শিবির নিয়ন্ত্রিত প্রবাহ কোচিং সেন্টারটি উচ্ছেদ করে তা জেলা প্রশাসনের অধীনে নেয়া হয়েছে।

১৫ জুন বৃহস্পতিবার সকাল ১১ টা থেকে বিকেল সাড়ে ৪ টা পর্যন্ত এই উচ্ছেদ অভিযানে নেতৃত্ব দেন জেলা প্রশাসনের নেজারত ডেপুটি কালেক্টর( এনডিসি) মো: তৌহিদুল ইসলাম। দীর্ঘ ৮বছর যাবৎ হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের এই মূল্যবান জায়গাটি জামাত-শিবির চক্র দখল করে সেখানে অনুমোদনহীন কোচিং সেন্টার সহ অন্যান্য ব্যবসা করে কোটি কোটি টাকা আয় করেছে। 


উদ্ধারকৃত জমির মূল্য প্রায় ৬ কোটি টাকার বেশি বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা।

উচ্ছেদ অভিযান পরিচলনাকারি মো: তৌহিদুল ইসলাম জানিয়েছেন- প্রবাহ কোচিং সেন্টারের কাগজপত্র ঘেঁটে দেখা গেছে, এই কোচিং সেন্টারের মূল মালিক হোসাইন আল হেশাম মো: জাবেদ। তার গ্রামের বাড়ি সাতকানিয়া উপজেলার ঢেমশা এলাকার জনৈক মাবুদ মাস্টারের বাড়ি।


উল্লেখ্য, চট্টগ্রামের চকবাজার এলাকা ঘিরে জামায়াত-শিবির চক্র বিভিন্ন নামে কোচিং সেন্টার ব্যবসা করে আসছে দীর্ঘদিন যাবৎ। আর এই কোচিং সেন্টার ব্যবসায় কোটি কোটি টাকা থেকে একটি বড় অংশ যায় তাদের রাজনৈতিক সংগঠনের সাংগঠনিক ও তাদের নেতা-কর্মীদের সাহায্যের জন্য। শুধু তাই নয় এসব কোচিং সেন্টার থেকে আয় করা অর্থ দিয়ে সরকার ও রাষ্ট্রবিরোধী বিভিন্ন নাশকতার জন্য ব্যয় করা হয় বলে বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার কাছে তথ্য রয়েছে।

তিনি আরো জানান- ভিপি মামলা নং- ২৪/৬৫-৬৬ মূলে ইমামগঞ্জ মৌজার বিএস ১৯৩ নং খতিয়ানভুক্ত ৬২৯ নং দাগের এই জায়গা ‘আজিজুর রহমান ইসলামিক স্টুডেন্টস রিসার্চ ইনস্টিটিউট’ কে লীজ দেয়া হয়েছিলো।


কিন্তু সরেজমিনে দেখা যায়- এই লীজ গ্রহীতা লীজের শর্ত ভঙ্গ করে প্রবাহ কোচিং সেন্টার নামে একটি বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানকে কোচিং ব্যবসা পরিচালনার জন্য দিয়েছেন। এর পাশাপাশি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের নামে আসবাবপত্রের দোকান পরিচালিত হয়ে আসছিলো। লীজ শর্ত ভঙ্গের দায়ে ইতোপূর্বে ভিপি লীজ বাতিল করা হয়েছিলো।


চট্টগ্রামে হিন্দুদের সম্পত্তি দখল করে কোচিং সেন্টার, উচ্ছেদ জেলা প্রশাসনের এই অর্পিত (ভিপি) সম্পত্তি অবৈধভাবে দখলে রেখে প্রবাহ কোচিং সেন্টার প্রায় ৮ বছরের বেশি সময় ধরে এখানে পরিচালিত হচ্ছিল। দশটি রুমে পরিচালিত হচ্ছিল জমজমাট কোচিং ব্যবসা। উচ্ছেদ অভিযানের পর কোচিং সেন্টারের সকল মালামাল অপসারণ করা হয়েছে।


প্রায় ২৫০ টি টেবিল-বেঞ্চ, ৮ টিএসি, ২টি ফ্রীজ, আলমারি সহ কোচিং সেন্টার সংশ্লিষ্ট মালামাল প্রবাহ কোচিং সেন্টারের হিসাব কর্মকর্তা আনোয়ার হোসাইনকে বুঝিয়ে দেয়া হয়েছে। এই উচ্ছেদ অভিযানে সিএমপির পুলিশ টিম, চকবাজার থানা টিম, পিডিবি এবং কর্ণফুলী গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন সহায়তা করেছেন।


প্রসঙ্গত, গত ৩০ মে চট্টগ্রাম নগরীর কলেজ রোড এলাকা থেকে জামায়াতে ইসলামী নিয়ন্ত্রিত ইসলামী সমাজ কল্যাণ পরিষদের অবৈধ দখল থেকে কয়েক কোটি টাকার মূল্যবান সরকারি সম্পত্তি উদ্ধার করেছিল চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন। জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট প্রতীক দত্ত এই অভিযান পরিচালনা করেছিলেন। আর এরপরই তাকে মোবাইল ফোনে হত্যার হুমকি দিয়ে দুই দফা ফোন করেছিল অজ্ঞাতনামা ব্যক্তি। এ ব্যাপারে অবশ্য ঢাকার শাহবাগ থানায় একটি জিডিও করেছেন প্রতীক দত্ত।

Post a Comment

Previous Post Next Post